।। বাক্‌ ।। রবিবারের চতুর্ভুজ ।।








মাসুদার রহমানের কবিতা 



ডায়েরি
                                                                                        
২৩/১০/২০১৭

বারান্দায় রোদ কমবেতের চেয়ার। কার মুখ খবরের কাগজের আড়ালে! দূর থেকে চিনি না তাকে তবে দেখি, ও বাড়ির নিধুবাবুফিরে এলো হাতে বাজারের থলেডাকলো কাউকে? কেউ তো এলো না। 

উঠোনে মুরগির ঘর। কয়েকটি মুরগি চরছে। বার বার ডেকে উঠলো একটি মোরগ।

কাগজে ডোবানো মাথা। সাড়া নেই। কাগজের ভিতরে থাকে গোপন-প্রকাশ্য অনেক অনেক পথ। কতবার সেই সব পথে নিজে হারিয়ে গিয়েছি। তুমিও গিয়েছ? লোকটিও হারিয়ে গিয়েছেহয়তো মফস্বল সংবাদদাতার মাছের আড়তে নিয়ে করা কোন ফিচার সংবাদে। যখন কাগজ থেকে মুখ তুলে ফিরবে লোকটি। শুঁকে দেখ লোকটির পরনের কাপড়গুলো সমস্ত শরীর জুড়ে মাছের আঁশটে গন্ধ তখনও রয়েছে!





২৩/১০/২০১৭

গতরাতে বৃষ্টি হল সকালে শীতের আভাস মধ্য কার্তিককে এসে মেঘেদের শ্রাবণ প্রবণতা; বড্ড অবাক করা। এ্র রকমও মাঝে মধ্যে কদাচিৎ হয়! 

চোখ বুজে আমি দেখি, দূরের কমলাবন। কমলালেবুর গায়ে রঙ আসছে ধীরে ধীরে। প্রত্যেক গাছের নিচে শীত-ফাঁকা ঝুরিগুলি। শীতকাল এসে যাবে। ঝুরিগুলি ভরে উঠবে অরেঞ্জ কালারে  

মধ্য কার্তিকের বাড়ি, শ্রাবণ এলো পথ ভুলে। গাইছে শীতের গান হেমন্ত মুখোপাধ্যায়







 সোনালী চক্রবর্তীর কবিতা 



অলাতচক্র 

দেউলে মাথা ঠুকতে ঠুকতে সিঁদুরের ক্যানভাস বদলে যাওয়া প্রৌঢ়ার মনে থাকে প্রথম মানতের উদ্দেশ্য? 

যে কোনও পাষাণেই কৃষ্ণ আত্মা খোঁজা যোগিনীর আদৌ জানা থাকে নীলের সংজ্ঞা? 

একাধিকবার যে নাড়ি ছিঁড়ে সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় তার এক শতাংশও যন্ত্রনা কম থাকে কোনওবার?

যত বড় হারেম, ততো নামী সুলতান,
আর সতী নারীর রাজ্যসীমানা তুলসী মঞ্চের কিনার,
ঈশ্বর নিরপেক্ষ?
কেউ শুনেছে কোনোদিন অপুরুষ কণ্ঠে আজান?
দুই-ই তপস্যা,অথচ,
অহল্যা আর বাল্মীকিতে হাস্যকর ব্যবধান



আর্যাবর্ত 

কেন পাপের দোহাই তোলো?
এ দেহেই পঞ্চ উন্মাদ লীলা
হৃদকমলে ভ্রমর নাচে,
অলীক সৃজন, রেতঃ খেলা?

স্বস্তি খোঁজো মঙ্গলঘটে, 
কেউ বলেনা, তুমি দ্রাবিড়?
বিশ্বাস তোমার বর্ণশ্রেষ্ঠে,
যদিচ, বৈষ্ণবীরও সিধে মাপো

এ পাড়ের বাসর,
সাজায় শ্মশান,
জন্মের পর জন্ম,
দাহ করে আসা বন্ধন,
এ রজঃ একদিন রাজতিলক হবে,
সে রাজর্ষির প্রতীক্ষা,
নিয়ত ধ্রুব রাখে ধ্যান,
এবং অবগাহন







 শানু চৌধুরীর কবিতা 



সংরক্ষিত আলোরা

.
সমস্ত শস্য আমার শরীরের উপর, মাটি তুলে নেওয়ার পর চুঁইয়ে পড়ছে ফোঁটা ফোঁটা আলোকিত গহ্বর
একটা লম্বা হাঁটা অন্তঃসম্পর্কের দিকে তুমি আমাকে ঘিরে রেখেছকিন্তু,কেউ লক্ষ্য করছে না-নির্ভাঁজ,
অভেদ্য দায়াধিকার আমি ক্রোধের সন্তান ছিলাম খানিক ঘনত্বের মাঝে ঘুরে ঘুরে দেখেছি বলির পশুর
ভালোবাসা

.
বৃক্ষের মাঝেই অর্ন্তদগ্ধ কফিন প্রকাশ্যসংশ্লেষ প্রতিটা উপযুক্ত ব্যবহারের হর্ষনাদ আমার একটাও কথা বলবার
সাহস নেই উপস্থিতিহীন কত কলঙ্ক জন্মাল আজ!বিন্দুমাত্র চিহ্ন ছাড়া তবু,ইস্ত্রি তার জড়তাবলে নিপাট করছে
দৈনিক কলঙ্কের একজোড়া জামা

.
আমার সমর্থনে কোনো পর্বত নেই আছে অসমান,রুক্ষ এক টিলা যাদের দেহের শ্যাওলা আমার পটভূমি
সবকিছুই শান্তিপূর্ণ কিন্তু আমার মুখের কথাগুলো তোমার মুখের পাথর বেয়ে উঠতে উঠতে ক্রমান্বয়ে হয়ে
উঠছে পাহাড়সমান

.
চৈতন্য তাঁর রক্তাক্ত মুখের অন্তরীপ আমার এক অনুসন্ধান আত্মপ্রকৃতির নীচে কিভাবে রয়েছেন বিপ্লব?
এক টুকরো হয়ে যাওয়া শব্দ চাই, কেশবভারতীর দীক্ষায় আমার শরীরেও বইছে অন্যায্য ইতিহাসকারের
অনুগ্রহের প্রবঞ্চনা যেখানে আলোর স্বাভাবিকতা সংরক্ষিত করে রাখা হয়

.
স্যাঞ্চো তোমার বস্তুগত চিন্তায় ধরা দিচ্ছে লা মাঞ্চা এভাবে সরাইখানার পাখি উড়তে উড়তে স্পষ্ট জীবনের দিকে মুখ ফেরানোর কথা এই চৌহদ্দিরসব অনূদিত প্রার্থনা শেষ হলে রাজকুমারী ডুলসেনিয়া কল্পনার    প্রবণতায় আটকে রইল ধর্মাবতার……অথচ বিস্ময়কন্ঠের কিহোতে তোমার যুদ্ধোত্তরেই রয়েছে অবশিষ্ট সম্ভাব্য কথোপকথনের কঠিন রক্তপাত







অনুপম মুখোপাধ্যায়ের কবিতা 



আমি যেভাবে ওড়ে ।। ১টি কবিতামূলক পুনরাধুনিক কাজ

।।
যে বাক্সে রং থাকছেআমি থাকছে না
সমুদ্র অসাড় হলে কলঙ্কে করুণ লেগে যায়
মোহান্তপুর মোহনপুরের মধ্যে
খণ্ড খণ্ড পাখি তাদের
নতুন কোনো অবিনাশী এয়ারপোর্ট নেই
১ ফালি জলমাখা লাল বারান্দা। কাদা
মরা মাছের মাংসকেই তো মাছ বলছে লোক
দীনবন্ধু মিত্রকে তবু খাজনা দেব কেন
দয়াসিন্ধু বসুকে বাজনা দেব কেন
তুমি চাঁদে চড়োআমি পৃথিবী ভাঙে
ককপিটময় পাইলটময়উলুরব
সিঁদুর সিঁদুর ফল উড়তে থাকে
মাঠে একা দাঁড়িয়ে থাকছে
মই। পুজোশেষে ওখান থেকে
গরম কুসুম
আলো নামানো হবে
বেনাঘাস। শ্যামাঘাস। দুর্বাঘাস
অসভ্য বিমানসেবিকা
ধমক দিচ্ছে তার নরম মুখ
নেড়ে
তাও ছেড়ে
আকাশে বেরিয়ে পড়ার গুচ্ছভ্রমণকাহিনি
যত মৌগন্ধী হচ্ছে
দৈত্য থেকে বেরিয়ে আসা
চেরাগ চাইছে আমি
।।